খাঁচার স্বাধীনতা

এই পক্ষীযুগল আমাকে গভীরভাবে অবাক করে।
কি অপার শান্তিতে, শিষ্ট ভঙ্গিতে ওরা লোহার শিকের খাঁচার ভেতরে চুপটি করে বসে থাকে।
না আছে জীবনের কাছে কোনো চাওয়া, না কোনো অভিযোগ।
দু’বেলা সামান্য খাবার আর একটু পানি পেলেই যেন কৃতজ্ঞতায় ভরে ওঠে চোখদুটি।
ওরা জানে না, মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়ে বেড়ানোর আনন্দ,
গাছে পেকে যাওয়া পেপে ঠুকরে খাওয়ার স্বাদ,
বর্ষার কদমফুলে লাফিয়ে বেড়ানোর আত্মতৃপ্তি কেমন হয়।
এক তারিখে, সারাদিন ওদের খাঁচার দরজা খুলে রেখে চুপটি করে বসে রইলাম।
ভাবছিলাম, আজ হয়তো ওরা বুঝবে—স্বাধীনতার মানে কী।
শেষবারের মতো ওদের উড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখবো ভেবে অপেক্ষা করছিলাম।
কিন্তু ওরা আমায় অবাক করে দিয়ে দেখিয়ে দিলো—
তাদের কাছে এই খাঁচাই স্বাধীনতা।
ওদের ইচ্ছেতে নেই আকাশ ছোঁয়ার আকাঙ্ক্ষা, নেই কোনো ছুটে চলার তৃষ্ণা।
তারা বুঝলো না, একবার খাঁচা ভেঙে বেরিয়ে গেলেই
জীবনটা হয়তো অন্যরকম হতো,
একটা আসল বাঁচার স্বাদ তারা পেতো।